ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি,
আক্রান্ত ১৬ জনেই কুষ্টিয়া জেলা আপাতত স্থির রয়েছে। এর বাইরে ঢাকা থেকে আসা আরো ২ জন রোগী কুষ্টিয়ার একটি আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেখানে আরো ৫ রোগী রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন ঢাকা থেকে আসা। বাকীরা নিজেদের বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইতোমধ্যে জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা দুই রোগী চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। ১ মে তাদেরকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। তারা সেখানে ১০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরা ঐ ১৬ জনের মধ্যে।
ওদিকে জেলার খোকসা উপজেলার একই পরিবারের ৫জনের অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত বলে জানিয়েছেন খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কামররুজ্জামান সোহেল। তিনি জানান পরিবারটি পুরোপুরি নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছে। তাদের টেস্টের ফলাফল ১ মে আসতে পারে।
জেলা চিকিৎসা দফতরের মতে, কুষ্টিয়া করোনা রোগের প্রার্দুভাব ও বিস্তারের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারেনি। বিশেষজ্ঞগণ এর কারন বলছেন ভৌগলিক। এখানে শিল্প কারখানা, নদী-বন্দর বা বাইরের মানুষের আনাগোনা কম ছিল। এখানে শুরু থেকেই সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন তৎপর ছিল। বিচ্ছিন্ন মানুষের তৎপরতা চোখে পড়লেও সংঘবদ্ধ মানুষের ঢল ছিল না।
নানা কারনে কুষ্টিয়াতে সংক্রমণ হয়নি। প্রশাসনের তৎপরতা ও মানুষের সচেতনতা এখানে কাজ করেছে। তাছাড়া, শেষ দিকে হবার কারনে এখানে পরিস্থিতি ওতটা কঠোর হতে দেখা যায়নি,” বললেন ডাক্তার তাপস কুমার সরকার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল।
ডাক্তার তাপস কুমার সরকার জানান, তবে তারপরও পরিস্থিতি কখন কোন দিকে মোড় নেয় তা বলা যায়না।দোকান পাট খুলে দেয়া প্রসঙ্গে এই চিকিৎসক জানান অনেক কিছুই খুলে দেয়া যেতে পারে তবে মানুষ সচেতনভাবে যদি সেটির সঠিক ব্যবহার করে তবেই সেখানে অঘটনের সম্ভাবনা কম থাকবে।কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন জানান এই রোগের ভয়াবহতা বিস্তার রোধে কুষ্টিয়া প্রশাসন প্রথম থেকেই তৎপর ছিল। নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে এক সিংহভাগ মানুষকে নিয়মের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছিল।
তিনি সবাইকে নিয়ম, অনুশাসন মেনে চলার পরামর্শ দেন। প্রশাসনের সকল নজরদারী অব্যাহত থাকবে বলে জেলা প্রশাসক জানান।আজ ৫ মে, ২০২০ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন, কুষ্টিয়া ও কুষ্টিয়া জেলায় ৬ টি উপজেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ কর্তৃক মোট ১২ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ২৮ টি মামলায় ২৯ জনকে ৪১,৯০০ টাকার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ এবং সক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৪(১)(২) ও ২৫(১/২) ধারায় ১৮ টি মামলায় ৪১,৯০০ টাকার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া দ্রব্যেমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মজুদ রোধ এবং করোনা আক্রান্তদের বাড়ি লক ডাউন ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুর ফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য গ্রাম পুলিশ/আনসার নিয়োগ করা হয় এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কালে জন সাধারণের মাঝে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে লিফলেট বিতরণ করা হয়। জন স্বার্থে মোবাইল কোর্টের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।